ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন ও ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর এঁর অনুমোদনক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩-এর আর্টিকেল ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী তাঁকে আজ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার চার বছরের জন্য এই নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
নিয়োগ লাভের পর ড. বাছার প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) হিসেবে আজ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের জীবনবৃত্তান্ত
অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ১৯৬২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার হাতিরডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগ থেকে ১৯৮৩ সালে বি. ফার্ম (অনার্স) এবং ১৯৮৪ সালে এম. ফার্ম ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনশিপ (ICCR) বৃত্তির অধীনে ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. বাছার ১৯৯৭ সালে ফার্মেসি বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। তারপর পর্যায়ক্রমে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়ে তিনি ২০০৭ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ২০১৪ সালের ২৯ মে থেকে ২৮ মে ২০১৭ পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
ড. বাছার একজন স্বীকৃত medicinal chemist হিসাবে indan-based anti-inflammatory, analgesic, plant growth regulatory compounds, and structure-activity ইত্যাদির বিশেষ একজন দক্ষ গবেষক। তিনি ফার্মেসি শিক্ষায় শিক্ষিত একজন অসামান্য ওষুধ বিজ্ঞানী। তিনি isolation, purification, and pharmacological evaluation of Bangladeshi traditional and herbal medicines এবং তাদের গুণমান বজায় রেখে বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে অনন্য দক্ষতার অধিকারী একজন বিশেষজ্ঞ। অধ্যাপক বাছার তার গবেষণাকে এগিয়ে নিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কয়েকটি গবেষণা অনুদান লাভ করেন।
একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে হাসপাতাল ও ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অনুশীলন এবং ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ড. বাছার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ক্লিনিকাল ও ফার্মেসি প্রাক্টিসের ক্ষেত্র তৈরি করেন। তিনি দেশে ফার্মাকোভিজিল্যান্স (প্রতিকূল ওষুধের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ) কার্যক্রম বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন এবং ওষুধের পার্শ- প্রতিক্রিয়া হ্রাসে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন। একটি জাতীয় কারিগরি কমিটির সদস্য হিসাবে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে হাসপাতালে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা উল্লেখপূর্বক সংক্রমক জীবাণুগুলোর অ্যান্টিবায়োটিকের বিরূদ্ধে প্রতিরোধী (AMR) হয়ে ওঠা ঠেকাতে সব ধরণের বিশেজ্ঞদের সাথে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অধীনে বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য হিসাবে মহামারী পরিস্থিতিতে ওষুধ, ভ্যাকসিন এবং সম্পর্কিত চিকিৎসা ডিভাইসের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনে সক্রিয়ভাবে অবদান রেখেছেন।
ড. বাছার গবেষণা ও শিক্ষায় ৩৫ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তিনি clinical, medicinal and natural products chemistry-র ক্ষেত্রে উচ্চমানের আন্তর্জাতিক জার্নালে বেশ কয়েকটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশনার সংখ্যা ১৪০টিরও বেশি। তারমধ্যে গবেষণা নিবন্ধ ১৩০টি এবং ১০টি বইয়ের চ্যাপ্টার রয়েছে। তিনি সক্রিয়ভাবে clinical research-এর সাথে জড়িত আছেন। বাংলাদেশে একটি mRNA vaccine candidate উদ্ভাবনের জন্য গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড, বাংলাদেশ-এর গবেষকদের সাথে কাজ করছেন এবং দেশ-বিদেশে বাংলাদেশী জেনেরিক পণ্যগুলির (small molecules and biosimilars) bioequivalence studies পরিচালনা করছেন।
(মাহমুদ আলম)
পরিচালক
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়