হলে আবাসিক সিট পাওয়ার সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল ছাত্রীকে আসন বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে তাদের ‘আবাসন সহায়ক আর্থিক সহায়তা প্রদান’ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ন্যায্যতা ও চাহিদার ভিত্তিতে আবেদনকারী ছাত্রীদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা হারে এই সহায়তা প্রদান করা হবে। আজ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রেস ব্রিফিং-এ আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় গৃহীত স্বল্প-মেয়াদি, মধ্য-মেয়াদি ও দীর্ঘ-মেয়াদি বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা ও পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
প্রেস ব্রিফিং-এ প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ও প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুনসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন ছাত্রী হলে প্রায় ৫শ’ বাঙ্ক বেড স্থাপন করে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বচ্ছ পদ্ধতি ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ১ম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ছাত্রীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ব্যতিক্রমী ঘটনা।
কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনে চীন সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ২৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী হল নির্মাণ প্রকল্পটি’ মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যেই অনুমোদিত হয়েছে। বর্তমানে এটি ই আর ডি-এর অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৮শ’ ৪১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রস্তাবিত ৪টি ছাত্রী হলের বর্ধিত ভবন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই প্রকল্পে শাহনেওয়াজ হোস্টেল ভেঙ্গে ১৫-তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রী হল নির্মাণ, ১০-তলা ও ৬-তলা বিশিষ্ট শামসুন নাহার হলের দু’টি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের বিদ্যমান স্টাফ কোয়ার্টার বি এবং ডি ভবন ভেঙ্গে ১১-তলা ও ৮-তলা বিশিষ্ট দু’টি ভবনের সমন্বয়ে একটি ছাত্রী হল নির্মাণ এবং ১০-তলা বিশিষ্ট কুয়েত মৈত্রী হলের সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রকল্প দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে আবাসন সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা করছে।
(মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম )
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়